করলা চাষের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম জেনে নিন!

করলা চাষ পদ্ধতি – করলা গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও বর্তমানে সারা বছরই চাষ হচ্ছে ৷ করলার চাহিদা আগের থেকে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা এখন সারা বছরই করলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন ৷ ব্যক্তি উদ্দোগেও চাষ হচ্ছে করলা ৷ করলা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন জেনে নেওয়া যাক ৷

Table of Contents

করলা চাষ পদ্ধতি 

করলা চাষ পদ্ধতি

চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি তৈরি :

করলা চাষ করার জন্য ও ভালো ফলন পাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে জৈব পদার্থসমৃদ্ধ বেলে দোঁ-আশ বা দোঁ-আশ মাটি ৷ করলা চাষ করার জন্য প্রথমে নিতে হবে দুই ভাগ দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি, এরসাথে দিতে হবে ১ ভাগ গোবর, ২০-৩০ গ্রাম টিএসপি সার, ২০-৩০ গ্রাম পটাশ ৷

এগুলো একত্রে মিশিয়ে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে, পানিতে ভিজিয়ে ১-২ সপ্তাহ রেখে দিতে হবে । তারপর ভিজানো মাটি কিছুটা ওলটপালট করে বা ঝরঝরে করে আবার ও ৪-৫ দিন এভাবেই রেখে দিতে হবে।

করলা বীজ বপন পদ্ধতি

করলার বীজ বপনের জন্য সর্বপ্রথম মাটি পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে রাখতে হবে ৷ ২৪ ঘন্টা টবের, ড্রামের মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে অতপর করল্লার বীজ বপন  করতে হবে ৷ বীজ বপনের পর মাটি হাত দিয়ে সমান করে চাপ দিতে হবে ৷

করলার জমিতে সেচ পদ্ধতি ও পরিচর্যা

সেচ পদ্ধতি :

করলার  জমিতে বীজ বপন করার পর এতে নিয়মিত পানি দিতে হবে । সেই সাথে খেয়াল রাখতে হবে, যেন টবে বা গাছের গোড়ায় কোনোভাবেই পানি জমে না থাকে । গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকার ফলে গোড়া পচে যায় । করলা চাষ পদ্ধতি তে এজন্য করলা গাছে সঠিক পরিমাপে পানি দিতে হবে ।

পরিচর্যা:

করলা গাছ বড় হতে থাকাকালীন অপ্রয়োজনীয় বা মরা লতাপাতা বেছে ফেলে দিতে হবে । টব বা ড্রামের মাটি হালকা নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে, এতে করলা গাছের তাহলে শেকড় বৃদ্ধি পাবে । আগাছা জন্মালে তা পরিষ্কার করে দিতে হবে । গাছের গোড়া পরিষ্কার থাকলে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেক কমে যায় । করলা গাছ একটু বড় হলে মাচার ব্যবস্থা করে দিতে হবে । এছাড়াও গাছে নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হবে ।

>> চিচিঙ্গা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!

এছাড়াও সঠিক পরিমাণ সার দিতে হবে । করলার চারা বেরোনোর পর মাঝে মধ্যে পানি দিতে হবে । যখন করল্লা ধরা শুরু করবে, সে সময় সরিষার খৈল পচা পানি পাতলা করে গাছে ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর নিয়মিত দিতে হবে । টবে জৈব সার দিতে হবে, যেন গাছ মাটি থেকে খাদ্য উৎপাদন করে বাড়তে পারে । প্রয়োজনে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যায় ।

রোগবালাই দমন ও করলা সংগ্রহ

রোগবালাই দমন :

যেসকল পোকা করলা গাছে আক্রমন করে তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাছিপোকা, পামকিন বিটলসহ বিভিন্ন পোকা ও ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগ, পাউডারি মিলডিউস । গাছে রোগ বা পোকামাকড় আক্রমণ করলে অতিদ্রত কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে । পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচতে সেক্স ফেরোমন ও বিষটোপ ফাঁদের যৌথ ব্যবহার করার প্রচলন রয়েছে ৷


করলা সংগ্রহ:

করলা পেকে যাওয়ার আগেই সংগ্রহ করে নিতে হবে ৷ কাচা করলা ছোট বা বড় যেকোন অবস্থায়ই সংগ্রহ করা যায় ৷ পাকা করলা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায় না । এজন্য করলা পরিপক্ব হওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে হবে।

>> বাড়ির ছাদে সবজি চাষ পদ্ধতি জেনে নিন!


গুণাগুণ:

করলায় প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা মানবদেহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্য উপকরণ দিয়ে থাকে। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় ৯২.২ গ্রাম জলীয় অংশ, ক্যালসিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম, ২.৫ গ্রাম আমিষ, ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন ৪.৩ গ্রাম শর্করা থাকে ৷ 


করলার উপকারিতা:

নিয়মিত করলা খাওয়ার অভ্যাস করলে নানা রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । করলা খাওয়ার ফলে রক্তের সমস্যা, চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসাসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top