কুমড়া চাষ পদ্ধতি

কুমড়া চাষ পদ্ধতি সমূহ । সহজে লাভবান হবার উপায়

কুমড়া সাধারণত মিষ্টি হয় ও এর রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ ৷ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কুমড়া বেশ উপকারী ৷বসতবাড়িতে চাষ বা বানিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে কুমড়া চাষ করার জন্য কুমড়া চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত ৷ এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে ৷

Table of Contents

কুমড়া চাষ পদ্ধতি  

মাটি নির্বাচন : 

কুমড়া চাষের জন্য মাটি হিসেবে সবচেয় ভালো দোঁ-আশ বা এটেল দোঁ-আশ মাটি ৷ মাটিতে জৈব সারের পরিমান যত বেশি হবে, ততই তা কুমড়া চাষের জন্য ভালো হবে ৷

বীজ বপনের সময় : 

বছরের যে কোন সময়ই কুমড়ার বীজ বুনা যায় ৷ তবে ফেব্রুয়ারি থেকে মে ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস সবচেয়ে ভালো সময় ৷

জমি তৈরি : 

কুমড়া চাষ করার জন্য বীজ বপনের পূর্বেই জমি তৈরি করে নিতে হয় ৷ জমিকে তৈরি বা প্রস্তত করার জন্য মাটির সাথে আরোও কিছু উপাদান যেমনঃ জৈব সার, দস্তা, TSP, ম্যাগনেসিয়াম, বোরিক এসিড মাটির পরিমানে অর্ধেক দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে ৷

বপনের উপযুক্ত চারার বয়স : 

কুমড়ার চারার বয়স বীজ হিসেবে বপনের ১৫-১৬ দিন পর তা চারা হিসেবে বপনের উপযোগী হয় ৷

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি

চাল কুমড়া চাষ করার উপযুক্ত সময় হচ্ছে ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস ৷ এসময়ে চাল কুমড়ার চারা রোপন করতে হবে ৷

চারা রোপনের পূর্বের দিন মাটি পানি দিয়ে ভালোমতো ভিজিয়ে নিতে হবে ৷ চারা রোপন করার জন্য বিকেল সময় বেছে নিতে হবে ৷

চারা রোপনের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ৷ মাটির ঢেলা ভেঙে যেন চারার কোন সমস্যা না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে৷

চাল কুমড়া চাষের জন্য সার হিসেবে কম্পোস্ট,ইউরিয়া,টিএসপি,পটাশ,জিপসাম,কম্পোস্ট ব্যবহার করতে হবে ৷

জমিতে নিয়মিত সেচ দিতে হবে ও আগাছা দমন করতে হবে ৷ অতিবৃষ্টির ফলে পানি জমে গেলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে ৷

টবে কুমড়া চাষ পদ্ধতি  

টবে কুমড়া চাষ পদ্ধতি নিয়ে অনেকেই জানতে চান ৷ টবে কুমড়া চাষ পদ্ধতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টব বা ড্রামের সাইজ ৷

কুমড়া চাষের টব হওয়া প্রয়োজন বড় আকৃতির ৷  ড্রাম হলে যা হবে মাঝারি সাইজের ৷ টব/ড্রামে মাটি দিয়ে কুমড়া চাষের উপযোগী করতে হবে ৷

মাটি হতে হবে দোঁ-আশ, বেলে দোঁ-আশ বা এটেল ৷ মাটিতে কম্পোস্ট,ইউরিয়া সার মিশিয়ে নিন ৷ সে মাটি টব বা ড্রামে দিয়ে দিন ৷

মাটি টব বা ড্রামে দেবার কিছুদিন পর তা উল্টে পাল্টে অল্প কিছু পরিমান পানি দিন ৷ সেভাবে ৭ দিন রাখুন ৷ এরপর সে মাটিতে ৪-৫ টি কুমড়ার চারা বুনে দিন ৷

>> মাল্টা চাষ পদ্ধতি জেনে শুরু করুন মাল্টা চাষ!

কুমড়ার চারা একাধিক হলে সবচেয়ে সতেজ ও শক্তিশালী একটি চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলুন ৷ নাহলে কোন গাছই ঠিকমত হবে না ৷

চারা রোপনের পর গাছে নিয়মিত পানি, সার ও আগাছা দমন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে ৷ এর ব্যতয় হলে ভালো ফলাফল লাভের সম্ভাবনা কমে যাবে ৷

কুমড়া গাছের পোকা ও রোগবালাই :

কুমড়া গাছের চিরশত্রু নানাবিধ পোকা ৷ পোকার আক্রমনে প্রায়শই কুমড়া গাছ মরে যায় ৷ যেসকল পোকা কুমড়া গাছে আক্রমণ করে সেসকল পোকা ও তার প্রতিকার  :

মাছি পোকা : কুমড়া গাছের মধ্যে মিষ্টি কুমড়ো গাছে সাধারনত মাছি পোকা দেখা যায় । এ পোকাগুলো কচি ফল ও ফুলে ডিম পেড়ে নষ্ট করে ফেলে ।

প্রতিকার : আক্রান্ত হলে ফল বা ফুল ফেলে দিতে হবে । এছাড়া বিষটোপ ব্যবহার করা যেতে পারে ।

বিটল পোকা : কুমড়া গাছে রেড পামকিন (Red Pamkin) নামের বিটল পোকা দেখা যায় । রেড পামকিন পাতা, কচি ফল ও ফুল খেয়ে নষ্ট করে দেয় ।

প্রতিকার : পাতা,কচি ফল বা ফুল আক্রান্ত হলে পোকাগুলি ফেলে দিতে হবে । এছাড়া নিমবীজের দ্রবণ বা সাবানগুলিয়ে স্প্রে করলে এ পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমে যায় ।

জাব পোকা : কুমড়া গাছে জাব পোকার আক্রমণ খুব বেশি হয় । এ পোকার আক্রমণ হলে কুমড়ার  ডগা ও পাতা হলুদাভ হয়ে পড়ে ।  এ পোকা মিষ্টি কুমড়ো গাছের পাতার রস চুষে খায় । যার ফলে পাতা বিকৃত হয়ে যায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ।

প্রতিকার : জাব পোকায় আক্রান্ত হলে পোকাগুলি অতিদ্রুত ফেলে দিতে হবে । এছাড়া নিমবীজের দ্রবণ বা সাবানগুলিয়ে পানি স্প্রে করলে এ পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমে যায় ।

>> পেঁপে চাষ পদ্ধতি – রোগবালাই ও কীটনাশক সহ বিস্তারিত!

শেষ কথা  

কুমড়া চাষ তুলনামূলকভাবে সহজ বলা চলে ৷ কম পরিশ্রমে ফলাফল পাওয়া যায় ৷ পাকা কুমড়া ৪-৬ মাস ঘরে রেখে খাওয়া যায় ৷ এজন্য এর চাহিদা ও ব্যাপক ৷

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top