আলুর ফলন বৃদ্ধির উপায় : আলু হলো বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। ধান ও গমের পরই সাধারণত আলুর স্থান। দোআঁশ ও বেলে মাটিতে সাধারণত আলুর চাষ করা হয়। এই মাটিতে আলু চাষ করা মোটামুটি সহজ।
কিন্তু অনেকেই জানে না আলুর ফলন বৃদ্ধির উপায় গুলো। তাই আজ জানাবো কি কি করলে আপনার আলুর ফলন ভালো হবে।
আলুর ফলন বৃদ্ধির উপায়
জাত নির্বাচনঃ
আলু চাষ করার আগে অবশ্যই আপনাকে বিবেচনা করতে হবে কোন জাতের আলু রোপন করবেন৷ জেনে নিতে হবে কোন জাতের আলু রোপন করলে আপনার ফলন ভালো হবে। বিএআরআই এ পর্যন্ত আলুর মোট ৮৩টি জাত অবমুক্ত করেছে। মুক্তায়িত জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ উপযোগী খাবার আলু, রপ্তানীযোগ্য আলু, রোগপ্রতিরোধী আলু ও সাধারন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায় এমন আলুর জাত। এবং প্রয়োজন ও চাহিদা মোতাবেক জাত নির্বাচন করতে হবে এদের মধ্যে থেকে।
মাটি নির্বাচন:
সাধারণত যে কোনো মাটিতে আলু চাষ করা যায়। তবে বেলে মাটি ও দোআঁশ মাটিতে আলু চাষ সবচেয়ে উত্তম হয়। অবশ্যই উচুঁ জমি যেখানে, সেচ ও নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা আছে সে সকল জমি নির্বাচন করতে হবে। জমিটি অবশ্যই রৌদ্র উজ্জ্বল হতে হবে। জো আসার পর মাটিতে আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে প্রস্তুত করতে হবে।
বীজআলু শোধন:
আলু ফলন বৃদ্ধির উপায়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আলুর শোধন প্রক্রিয়া। বিডি কোল্ড স্টোরেজ থেকে বীজ আলু বের করার পর ৪৮ ঘণ্টা প্রি হিটিং কক্ষে রাখতে হবে। বীজআলু বাড়িতে আনা মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বস্তা খুলে ছড়িয়ে আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচল করে এমন ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। কেননা বীজ কোল্ড স্টোরেজ থেকে বের করে বস্তা বন্ধ অবস্থায় রাখলে ঘেমে পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সঠিক উপায়ে ৬টি চারা রোপন পদ্ধতি জানুন!
রোপণ পদ্ধতি:
শুধু চাষ করব বললে হবে না। জেনে নিতে হবে সঠিক পদ্ধতি গুলো। তাই রোপন করার জন্য অঙ্কুর গজানোর পর ১ম কুঁড়িটি ভেঙে দিতে হবে। কারণ ১ম কুঁড়ি ভেঙে দেয়ার পর অন্যান্য কুঁড়ি সমানভাবে বৃদ্ধির সুযোগ পায়। ৩০-৪০ গ্রাম ওজনের আস্ত আলু বীজ হিসেবে ব্যবহার করা উত্তম। কেটেও বীজ লাগানো যেতে পারে এবং লক্ষ্য রাখবেন যেন প্রতিটি কাটা অংশে কমপক্ষে ২টি চোখ বা কুঁড়ি থাকে। বীজ লাগানোর ২-৩ দিন আগে আলু কেটে ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিলে কাটা অংশের ওপর একটি প্রলেপ পড়ে।
বাংলাদেশে বর্তমানে শতকরা ৮০ ভাগের বেশি জমিতে ডায়ামন্ট, এস্টারিক্স, কার্ডিনাল, গ্রানোলা ইত্যাদি জাতের আলু চাষ হয়। নিচে জাতগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হল
ডায়মন্ড :
এটি মূলত খরার আলু হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এটির জীবনকাল ৮০-৯০ দিন এবং ফলন প্রতি একরে ১০-১২ টন হয়।
কার্ডিনাল :
বহুল ব্যবহৃত খাবার আলু হিসাবে এটি ব্যবহার হচ্ছে। ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এটি উৎপাদন হয়। ফলন প্রতি একরে ১০-১২ মেট্রিক টন হয়।
এস্টারিক্স :
আলুর এই জাতটি খেতে খুবই সু স্বাদু এবং উৎপদনও বেশি হয়। উৎপাদন মেয়াদকাল ৮০-৯০ দিন। ফলন প্রতি একরে ১২-১৪ মেট্রিক টন। এটি খাবার ও রপ্তানীযোগ্য আলু। আলু চাষ পদ্ধতি জেনে নিন আলু কিভাবে চাষ করতে হয়?
আলু চাষ পদ্ধতি, আলু চাষের জমি তৈরি, আলু চাষ, আগাম আলু চাষ পদ্ধতি, দেশি আলু চাষ পদ্ধতি, গোল আলু চাষ পদ্ধতি, আগাম জাতের আলু চাষ, আধুনিক পদ্ধতিতে আলু চাষ