কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা

কবুতরের রোগ ও চিকিৎসার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন!

কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা : আপনি যদি কবুতর প্রেমী হয়ে থাকেন এবং দামী কবুতর পালন করতে চান, কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে অবশ্যই ভাল ধারণা থাকা দরকার। তা না হলে শখের দামী কবুতর অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে। যা মনোকষ্ট এবং অর্থনষ্ট- দুইটা বড় সমস্যার কারণ। 

আজ আমরা কমন কিছু কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করবো। এগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি সহজেই আপনার কবুতরগুলোর সমস্যা ধরতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। আশা করি লেখাটি আপনাকে সহায়তা করবে।

কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর অসুস্থ্য হয় খাবারের মাধ্যমে, তাছাড়া পরজীবী বা জীবাণুর কারণেও অসুস্থ্য হয়ে থাকে। তাই কবুতর পালনে সবধরণের কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার।

ককসিডিওসিস বা রক্ত আমাশায়ি

এটি একটি পরজীজী দ্বারা সৃষ্টি হওয়া রোগ যা কবুতরের জন্য মারাত্মক হতে পারে। এই রোগটি পাচনতন্ত্রকে প্রবাবিত করে, যে কারণে কবুতর কম খায় বা খেলেও ঠিকমত হজম হয় না। তবে এটি নিরাময়যোগ্য, ঔষধ খাওয়ানোর মাধ্যমে এটির চিকিৎসা করা যায়।

কারণ: খাদ্যে বিষক্রিয়া এই রোগের প্রধান করাণ। সাধারণত সংক্রামিত প্রাণীর মল বা টিস্যুর মাধ্যমে অন্য কবুতরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই কোন কবুতর এই রোগে আক্রান্ত হলে তাকে আলাদা রাখুন এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন।

উপসর্গ: এই রোগের প্রথমত দৃশ্যমান লক্ষণ হলো ডায়রিয়, গুরুতর ক্ষেত্রে পায়খানা রক্তাক্ত হতে পারে।

চিকিৎসা: ডক্সিসাইক্লিন (ডক্সিভেট) 1 গ্রাম, মেট্রোনিডাজল (এমোডিস) 200 মিলিগ্রাম ট্যাবলেটের অর্ধেক এবং 30 মিলি স্যালাইন একসঙ্গে মিশিয়ে 10 মিলি করে দিনে তিনবার খাওয়ালে এই রোগে ভাল ফল পাওয়া যায়। 

ট্রাইকোমোনিয়াসিস বা ক্যাংকার রোগ

ট্রাইকোমোনিস গ্যালিন নামক এক ধরণের পরজীবী দ্বারা এই রোগ হয়ে থাকে। এই পরজীবীগুলো সাধারণত পাচনতন্ত্রের শুরু যেমন মুখ, গলা অথবা শেষের দিকে থাকতে পারে। 

কারণ: সংক্রামিত পানীয় জল খাওয়ার মাধ্যমে অথবা আক্রান্ত কবুতর তার বাচ্চাকে খাওয়ালে বাচ্চার এই রোগ হতে পারে। 

উপসর্গ: কবুতরের ওজন কমে যাওয়া, না খাওয়া এমনকি আকস্মিক মৃত্যুও হতে পারে। 

চিকিৎসা: এই রোগের চিকিৎসায় মেট্রোনিডাজল বেশ ভাল কাজ করে। 200 মিলিগ্রাম একটি মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেটকে চারভাগ করে দিনে তিনবার খাওয়াতে হবে। 10 মিলি পানিতে মিশিয়ে প্রতিবার খাওয়াতে পারেন। 

কৃমি

কবুতরের কৃমিগুলো সাধারণত স্থুল হয়ে থাকে। এরা গোল কৃমি, লোমকূপ, গ্যাপওয়ার্ম বা টেপওয়ার্ম দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়। এগুলো কবুতরের স্বাস্থ্যকে ব্যাপকভাব প্রভাবিত করে। কবুতরের ক্ষুধা কমে যায়, ডায়রিয়া হয় এবং দুর্বল হয়ে পড়ার কারনে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

কারণ: বিরক্তিকর এই সমস্যাটি খাবারের মাধ্যমে, সংক্রমিত প্রাণী থেকে বা পোকামাকড় খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

উপসর্গ:  ডায়রিয়া, পায়খানার সাথে কৃমি ঝরে পড়া, ওজন কমে যাওয়া, অস্বাস্থ্যকর ও দুর্বল চেহারা। 

চিকিৎসা: কিছু ঔষধ যেমন Elcaris 1 গ্রাম 1 লিটার পানিতে মিশিয়ে 20 টি কবুতরকে খাওয়াবেন। অথাবা 20 টা কবুতরের জন্য Pipervet 1 গ্রাম 1 লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়াবেন। প্রতি 5 থেকে 6 মাস পর পর নিয়মিত কৃমিও ঔষধ খাওয়ালে কবুতর কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। 

এগুলো ছাড়াও কবুতর আরো অনেক ধরণের রোগে আক্রান্ত হতে পারে যেমন- মাইকোপ্লাজমোসিস, অরনিথোসিস, সালমোনেলোসিস ইত্যাদি। আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। মাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!

উপসংহার

কবুতর পালনের জন্য কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানার কোন বিকল্প নেই। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবসময় একজন অভিজ্ঞ পাখি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কারণ যে কোন রোগের জন্য সঠিক ঔষধের নির্ধারিত মাত্রা প্রয়োজন।

ঔষধ কম খাওয়ালে যেমন সেটি কার্যকর হয় না, আবার বেশি মাত্রায় খাওয়ালে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এমনকি মারাও যেতে পারে। ড্রাগন ফলের চারা কোথায় পাওয়া যায় জেনে নিন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top