ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানুন!

ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা : তুলনামূলক সস্তা ব্রয়লার মুরগি আমাদের দেশের আমিষের ঘাটতি পূরণে যে বিরাট অবদান রাখে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাশাপাশি এটি লাভজনক পেশা এবং বেকার সমস্যা দূর করতেও ভূমিকা রেখেছে।

তবে ব্রয়লার মুরিগ পালনের ক্ষেত্রে আপনাকে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা। 

বিদেশি জাতের এই মুরগিগুলো সহজেই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই এর ব্যাপারে পরিপূর্ণ যত্ন এবং সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা ব্রয়লার মুরগির সাধারণ কিছু রোগ ও তার চিকিৎসা বিষয়ে সামান্য আলোচনা করবো। 

Table of Contents

ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

সাদা রঙের এই মুরগিগুলোর রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি। এর জন্য আমাদের দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ বড় ভূমিকা পালন করে। তাই এগুলো পালনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। 

ব্রুডার নিউমোনিয়া

এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণে ছোট ব্রয়লার মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়া রোগ হয়। খামার ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে মেনে না চললে এই সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগ সাধারনত খাদ্যে ছত্রাক জমলে এবং পানির মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। 

শ্বাসতন্ত্রের আক্রমণের ফলে এই রোগে আক্রান্ত মুরগির বাচ্চারা খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং তাদের মধ্যে হাঁপানি দেখা দেয়। বাচ্চাগুলো উপরের দিকে মুখ করে হা করে শ্বাস নিতে থাকে। ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায় এবং মুরগির বাচ্চাগুলো মারা যায়। দেশি মুরগির রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন!

এই রোগের চিকিৎসায় খুব বেশি উন্নতির পরিমাণ দেখা যায় না, তবে তুতে বা কপার সালফেট 0.5 গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। তাছাড়া অন্যান্য জটিলতা দূর করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা সালফানোমাইড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

ককসিডিওসিস বা রক্ত আমাশয়

প্রটোজোয়ার আক্রমনে হওয়া এই রোগ ব্রয়লার মুরগির জন্য বেশ ভয়ানক হতে পারে। বাচ্চা মুরগির ক্ষেত্রে এতে মৃত্যুহার অনেক বেশি। অধিক আর্দ্রতা ও লিটার স্যাতস্যাতে থাকলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। 

এই রোগে আক্রান্ত মুরগি পাতলা পায়খানা করে এবং পায়খানার সাথে রক্ত থাকতে পারে। খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং মাথা নীচেরদিকে ঝুলিয়ে ঝিমাতে থাকে। এই রোগ দেখা দিলে দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে খামারের সব মুরগি আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। সাধারণভাবে এতে আক্রান্ত প্রতি 100 মুরগির মধ্যে সাত থেকে আটটি মুরগি মারা যায়। 

ককসিডিওসিস দেখা দিলে খুব দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এতে বেশ কয়েক প্রকার ঔষধ ব্যবহার করতে হতে পারে, যা একজন ডাক্তারের নির্দেশিত মাত্রায় ব্যবহার করা ভালো। 

রাণীক্ষেত রোগ

ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে এই রোগটির নাম অবশ্যই চলে আসে। শুধুমাত্র ব্রয়লার মুরগি নয়, যে কোন জাতের মুরগির জন্য এই রোগটি সবচেয়ে ভয়ানক। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হলে খামারের সমস্ত মুরগি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। ব্রয়লার মুরগির ক্ষেত্রে এই রোগের মৃত্যুর হার শতকরা প্রায় 100 ভাগ। 

ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই কোন প্রকার অবহেলা না করে সঠিক সময়ে এই রোগের ভ্যাকটিন দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। 

এগুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু রোগে ব্রয়লার মুরগি আক্রান্ত হতে পারে। যেগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না থাকলে এইগুলো পালনের ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো। শিং মাছ চাষ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন!

শেষ কথা

যদিও এটি একটি লাভজনক পেশা, কিন্তু এটা থেকে লাভ পেতে হলে ব্রয়লার মুরগির রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে উন্নত ধারণা থাকা বাধ্যতামূলক। তা না হলে খুব সান্য সময়ের মধ্যে এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top