শসা চাষ পদ্ধতি : শসা এক প্রকারের ফল। আমাদের দেশে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে শসার চাহিদা। তাই কৃষকরা ও এই শসা চাষের পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কিন্তু শসা চাষ পদ্ধতির সঠিক নিয়মাবলি না জানায় অনেকই ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই আগে আমাদের সঠিক পদ্ধতিতে শসা চাষের নিয়ম জানতে হবে।
শসা চাষ পদ্ধতি
কিভাবে শসা চাষ করলে লাভবান হয়ে উঠবেন!
- জাত নির্বাচন:
শসা চাষ পদ্ধতি তে জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ২টি স্থানীয় জাত উৎপাদন করে থাকে তার একটি বারোমাসি ও অন্যটি পটিয়া জায়ান্ট নামে পরিচিত।
এছাড়াও বাংলাদেশী কয়েকটি বেসরকারী সবজি বীজ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই অনেকগুলো বিশুদ্ধ জাত ও হাইব্রিড (সংকর জাত) শসার বাজার জাত করেছে। তাই সবকিছু মাথায় রেখে আপনার একটি ভাল জাত নির্বাচন করতে হবে।
- মাটি ও জলবায়ু:
উর্বর দো-আঁশ মাটি ও অম্লক্ষারত্বের ঘনত্ব ৫-৫-৬. শসা উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। আর ২৫-৩০ সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রায় শসা সবচেয়ে ভাল জন্মে। তাই মাটি ও জলবায়ুর বিষয়টি ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ
- জীবন কাল:
জাত ভেদে সাধারণত ৭৫ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত হতে পারে শসার স্থায়ীত্ব কাল।
- সময়:
সব চেয়ে ভালো হয় ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শসার বীজ বপন করালে। এই সময়েই শসার ফলন সবচেয়ে ভালো হয়।
- বীজের হার:
এক শতকে বীজ হয় ২-৩ গ্রাম, একর প্রতি-২০০-৩২৫ গ্রাম, হেক্টর-প্রতি ৫০০-৮০০গ্রাম। বীজের হার সম্পর্কে জেনে রাখাটা খুবই জরুরি।
- জমি তৈরি:
বার চারেক মই ও চাষ দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুরে করে নেওয়া উচিত তাছাড়া ও৷ আগাছা সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ক্ষেত সমতল করে নিতে হবে তাহলেই ভালো ফসল পাওয়া সম্ভব
- বীজ বপন:
সচারচর ৪-৫টি করে বীজ লাগানো উচিত। বীজগুলো একদিন ও একরাত ভিজিয়ে-লাগানো সবচেয়েই ভালো হয়।
বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে নিচের জাত গুলোর সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়।
- গ্রীন কিং
- শিলা,
- আলাভী,
- বীরশ্রেষ্ঠ,
- শীতল,
- হিমেল,
- গ্রীন ফিল্ড,
ঘরোয়া উপায়ে টবে করুন শসা চাষ
টবে শসা চাষ পদ্ধতি:
খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে শসা ফলানো যায়। তাও আবার করে নিতে পারেন টবের মধ্যে। শসা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রীষ্মকালীন সবজি। কাঁচা শসা লবণ দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি খুবই উপকারী।
তেল নিষ্কাশনে ব্যবহার করা যেতে পারে শসা বীজ। বাড়িতে শসা রান্না করেও খাওয়া যেতে পারে। আপনি যদি বাড়ির বা বাগানের টবে শসা চাষ করতে চান তাহলে টবে শসা চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
টবে শসা চাষ পদ্ধতির জন্য কি কি করা উচিত?
- শসা চাষের জন্য টব নির্বাচন করা উচিত। শসার গাছগুলি সঠিকভাবে জন্মাতে ৩ গ্যালন পানি ধরবে এমন টব প্রয়োজন। শসা সঠিকভাবে বিকাশের জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত জায়গার।
- আপনি যে টবটি বাছাই করে নিয়েছেন সেটির ব্যাস এবং গভীরতা উভয়ই ন্যূনতম 12 ইঞ্চি হওয়া উচিত। অবশ্যই টবটির ব্যাস এবং গভীরতা সমান হতে হবে।
- অবশ্যই পাত্রে সঠিক নিকাশী গর্ত থাকা উচিত। নূন্যতম দুটি নিকাশী গর্তযুক্ত একটি টব গাছগুলির জন্য আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখার জন্য সেরা পছন্দ।
- টবগুলি কমপক্ষে ৯ ইঞ্চি প্রস্থ এবং ১৫ ইঞ্চি গভীর হওয়া উচিত।
- প্রতিটি টবে একটি গাছ রােপণ করা ভাল। শসা লাগানাের আগে আপনার টবটি ভালো ভাবে সাবান ও জল দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
- টবটির নীচে একটি ফাইবারগ্লাস পর্দা রাখা উচিত। কেননা পােকামাকড় রােধ করতে এবং মাটি ধুয়ে ফেলা থেকে রক্ষা করতে এইটি সাহায্য করে থাকে। শসার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সহ বিস্তারিত জেনে নিন!
পরিশেষে শষা চাষ পদ্ধতিতে অবলম্বন করুন সর্তকতা
শসা চাষ পদ্ধতির সময় কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। কেননা আপনি যদি এই গুলো অবলম্বন না করেন তাহলে আপনি যথাযথভাবে শসা চাষ করতে পারবেন না বা ফলন ভালো হবে না।
মনে রাখবেন সবসময় ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করার ব্যাপারটি। সবসময় লক্ষ্য রাখবেন কিটনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে । কিটনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে ৭ থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন। সঠিক বরবটি চাষ পদ্ধতি জেনে নিন!