সিম পাতার উপকারিতা: শীতকালীনএকটি অতি জনপ্রিয় সবজি হচ্ছে সিম। সিম নানা উপায়ে খাওয়া যায়। সিম কাচা অবস্থায় খাওয়া যায়, মাঝামাঝি অবস্থায় বিচি সংগ্রহ করে খাওয়া যায় ও শুকিয়ে খাওয়া যায়। সিম প্রচুর পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি সবজি। এতে রয়েছে প্রোটিন,শর্করা, আয়রন,ফাইবার ইত্যাদি।
শীতকালীন সবজি হিসেবে সিমের নানা ধরনের গুনাগুন লক্ষ্য করা যায়। শুধুমাত্র সিম যে উপকারী তা কিন্তু নয়, সিমের পাতায়ও রয়েছে অবিশ্বাস্যকর উপকারিতা। আজকে আমরা সিমপাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
চর্মরোগের মহা ঔষধ হিসেবে সিম পাতা যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সিম পাতার উপকারিতা এবং সিম পাতা কিভাবে ঔষধ হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের গুণাগুণে সমৃদ্ধ হচ্ছে সিম পাতা। চর্মরোগ দূর করতে সিম পাতার জুড়ি নেই। সঠিক ধুন্দল চাষ পদ্ধতি জেনে নিন!
সিম পাতার উপকারিতা
সিম একটি শীতকালীন সবজি এটা কে না চেনে। ছোট-বড় সবাই মোটামুটি সিম পাতার সাথে পরিচিত। সিম পাতা চর্মরোগ ও দাউদ এর জন্য মূল্যবান একটি মহা ঔষধ। সিম পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই দাউদ ও চর্মরোগ দূর করা সম্ভব। কারো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যাদি দাউদ বা চর্মরোগ দেখা যায়, তাহলে সিম পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাময় লাভ করা যাবে।
দাউদ নিরাময়ের সিম পাতা
শরীরের দাউদ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সিম পাতা। সিমপাতা দিয়ে দাউদ দূর করতে প্রথমে কয়েকটি সিম পাতা লাগবে। ৮ থেকে ১০ টি সিম পাতা ভালো মতো পানি দিয়ে ধুয়ে মিস করে নিতে হবে। তারপরে সেই পাতা আপনার দাউদের স্থানে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রাখতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহ নিয়মিত সিম পাতা ব্যবহার করার মাধ্যমে দাউদ দূর হয়ে যাবে।
চর্মরোগ দূর করতে সিম পাতা
দাউদ সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সিম পাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বলা যায় সিম পাতা দিয়ে খুব সহজেই আপনি আপনার শরীরের চর্মরোগ দূর করতে সক্ষম হবেন। বিশেষ করে দেখা যায় অনেকে আধুনিক ওষুধ ব্যবহারের ফলে শরীরে অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়, তাই ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে সিম পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে চর্মরোগ দূর করা যায়। আর এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে সিম পাতা দিয়ে চর্মরোগ দূর করব।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সিম পাতা
নিয়মিত সিম পাতা ব্যবহার করলে হার্ট অ্যাটাক বা অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে। বিশ্লেষকগণ বলে থাকেন যে হার্ট অ্যাটাক কমাতে উচ্চ পর্যায়ের ভূমিকা পালন করে থাকে সিম পাতা।
ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সিম পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এর প্রভাব গুলি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সিম পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য থাকে যন্ত্রের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। সিম পাথায় সর্বাধিক এন্টি-অক্সিডেন্ট কার্যকলাপ বিদ্যমান থাক।
ডায়াবেটিস এবং গ্লুকোজ বিপাক
সিম পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। এটি একটি উচ্চ পাইবার খাদ্য টাইপ যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
এটিতে যে বিশেষ উপাদান রয়েছে তা রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দৈনন্দিন এই পাতা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই রক্তে শর্করার পরিমাণ কমানোর জন্য সিম পাতা নিয়মিত ব্যবহার করা যেতে পারে। মৌসুম ভিত্তিক বারোমাসি সবজি তালিকা!
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ
লিভারে চর্বি জমার ফলে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে। ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ওজন কমানো এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ, সেইসাথে ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণ। সিম পাতা দিয়ে উচ্চ চর্বিযুক্ত প্রানির প্রোটিন প্রতিস্থাপন করা ও লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো পদক্ষেপ।
ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ
সিম পাতা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে বিদ্যমান ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর স্টার্চ পূর্ণতা এবং তৃপ্তির অনুমতি দেয়।
এটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় ব্যবহারের মাধ্যমে, অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি
বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় সিম পাতা অন্দ্রের বাধা ফাংশন উন্নত করে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া সংখ্যা বাড়িয়ে অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এটি অন্ত্র সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ইমিউন সিস্টেম ফাংশনকে ভালো রাখে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। সিম পাতা স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া উপনিবেশ করতে সহায়তা করে থাকে।
সিম পাতা দিয়ে চর্মরোগ দূর করার উপায়
সিম পাতা দিয়ে চর্মরোগ দূর করতে হলে প্রথমে ৮ থেকে ১০ টি সিম পাতা নিয়ে আসতে হবে। সংগ্রহ করা সিম পাতা গুলো ভালোভাবে মিস করতে হবে। তারপর মিস করা সিম পাতার রস শরীরের যেখানে যেখানে চর্মরোগ
সিমের উপকারিতা
- সিমের উপকারিতা অসীম। নিয়মিত সিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিমের জুরি মেলা ভার।
- সিমের মধ্যে শর্করা ও চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে যার ফলে ডাইবেটিজের সুরক্ষা হয়।
- সিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ যা চুল পড়া সমস্যার সমাধান সাহায্য করে।
- হাড়ের সংযোগস্থলের সুরক্ষা জোগাতে সিম বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- সিমে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যার ফলে ত্বকের আদ্রর্তা দূর করতে সাহায্য করে।
- সিমে প্রচুর আঁশ থাকে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ওজন কমাতে সিম কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।কারণ এতে প্রচুর আঁশ থাক।
- সিমে রয়েছে ইসোফ্লাবোনেস, ফাইটোস্টেরলসের মতো উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
উপযুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে সিম পাতার উপকারিতা ব্যাপক। এই সিম পাতা মূলত চর্মরোগ জাতীয় অসুখ মুকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে হলে সিম পাতার বিকল্প নেই।